বরগুনার তালতলীতে গৃহবধূ ধর্ষণ : কোর্টে মামলা

বরগুনার তালতলীতে গৃহবধূ ধর্ষণ : কোর্টে মামলা

টাঙ্গাইলদর্পণডটকম : বরগুনার তালতলীতে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের পর তাকে হত্যার জন্য কুপিয়ে জখম করেছে ধর্ষক পরিবারের লোকজন। অপরদিকে ধর্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করলে তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা মামলার হুমকী দিচ্ছে এ পরিবারটি। ধর্ষণের ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার জন্য একটি প্রভাবশালী মহল উঠেপরে লেগেছে বলেও ধর্ষিতা অভিযোগ করেন।এ ঘটনায় ধর্ষিতা বাদি হয়ে বরগুনা বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে মামলা দায়ের করেছে যার মামলা নং-৬৮১।

মামলা সূত্রে জানা যায়, তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের তাতিপাড়া গ্রামের মন্নান মাষ্টারের স্ত্রী হাসিনাবেগম (৪০) কে একই গ্রামের লালমিয়া প্রায়ই কুপ্রস্তাব দিত।শনিবার সকালে হাসিনাবেগম ফজরের নামাজের জন্য ভোর ৫টার দিকে ওজু করার জন্য পুকুরপাড়ে গেলে লালমিয়া তাকে জোড় পুর্বক ধর্ষণ করে। সকালে থানায় যাওয়ার জন্য  স্বামীর অপেক্ষা করিলে সকাল ৭ টার সময় লালমিয়ার  ৩ পুত্র জসিম, মনির, রাসেলসহ তার সহযোগি ৭/৮ জন অপরিচিত লোক নিয়া রান্দা, ছ্যানা, দাও, লাটি সোটা সহ হাসিনাবেগম এর বাড়ীর ভিতরে ঢুকিয়া তাকে একা পাইয়া এলো পাথারি ভাবে কোপাইয়া আহত করে। তার ডাক চিৎকার শুনিয়া স্থানীয়রা অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।

হাসপাতালের বেডে অসুস্থ হাসিনাবেগম বলেন, লালমিয়ার বাড়ি আমাদের বাড়ীর পাশা পাশি বিধায় প্রায়ই সে আমাদের বাড়ীতে আসত। বিভিন্ন সময় আমাকে নানা ভাবে কু-প্রস্তাব দিত। আমি তার কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে আমার গতিবিধি লক্ষ্য করিয়া চলে। এ ব্যাপারটি আমি আমার স্বামীকে জানাইলে, আমার স্বামী স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের কে বলিলে ও সে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়া জিজ্ঞাসা করিলে লালমিয়া  আরও ক্ষিপ্ত হইয়া আমাকে দেখাইয়া দিবে বলে হুমকী দেয়। অত.পর ঘটনার দিবস শনিবার মসজিদে ফজর নামাজের আযান দিলে প্রতি দিনের ন্যায় আমি আমার উত্তর ভিটির বসত ঘরের পূর্ব পার্শ্বে পুকুরে ওজু করার জন্য যাই, লালমিয়া পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে ওৎ পাতিয়া থাকিয়া সকাল ৫ টার সময় লালমিয়া আমাকে পিছন দিয়া মুখ চাপিয়া ঝাপটাইয়া ধরিয়া চাকু দিয়া খুনের ভয় দেখাইয়া আমাকে পুকুেরর উত্তর পার নিয়া উত্তর পারের মাটির উপর সোয়াইয়া ফালাইয়া আমার পড়নের কাপর টানা হ্যাচরা করিয়া খুলিয়া ফালাইয়া আসামী আমার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। আমি দস্তাাদস্তি করিয়া আসামীকে জড়াইয়া ধরিয়া ডাক চিৎকার দিলে আসামী আমাকে স্ব-জোড়ে আমার তলপেটে লাথি মারিয়া ছুটিয়া পালাইয়া যায়। লালমিয়া আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি মারিয়া ফুলা জখম করে।

আমার স্বামী এ ব্যাপারে এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তি দের নিকট জানাইয়া থানায় যাবে বলিয়া গেলে, আমি থানায় যাওয়ার জন্য  আমার স্বামীর অপেক্ষা করিলে  সকাল ৭ টার সময় লালমিয়ার ৩ পুত্র জসিম, মনির, রাসেল ও অন্যান্য অপরিচিত লোক নিয়া রান্দা, ছ্যানা, দাও, লাটি সোটা সহ আমার বাড়ীর ভিতরে ঢুকিয়া আমাকে একা পাইয়া এলো পাথারি ভাবে কোপাইয়া আহত করে।  আমি ডাক চিৎকার দিয়া অজ্ঞান হইয়া মাটিতে পরিয়া যাই। আমার জ্ঞান ফেরার পর দেখতে পাই আমি বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি। ঘটনার পর সাংবাদিকদের একটি টিম ঘটনাস্থল গেলে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে লালমিয়ার পুত্ররা মন্নান মাস্টারের লোকজনকে ভয়ভিতি দেখায়।

প্রত্যক্ষদর্শী এলাকার লোকজন ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। এ সময় তারা লালমিয়ার অপকর্মের বিচার দাবি করেন। স্থানীয় আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সভাপতি মজিদ খান বলেন, লালমিয়া  একটা লম্পট ঘটনাটি জানার পর আমরা বিচারের আস্বাস দিলেও লালমিয়ার পুত্ররা এ অসহায় মহিলার উপর হামলা চালিয়েছে  আমরা ওদের বিচার দাবি করছি।মজিদ খান আরো বলেন, লালমিয়ার বিরুদ্ধে যারা অবস্থান নিবে তাদের বিরুদ্ধে ওর বোন ও মেয়েকে দিয়া মিথ্যা মামলা করবে বলেও হুমকিদেয় লালমিয়া।

স্থানীয় নিশানবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল ফরাজী বলেন, লালমিয়া এলাকার লোকজনকে জিম্মি করে রেখেছে ও যে কাজ করেছে তার বিচার হওয়া দরকার। আমি মন্নান মাষ্টারকে বলে দিয়েছি আদালতে মামলা দেয়ার জন্য।এব্যাপারে তালতলী উপজেলা চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান মিন্টু বলেন, লালমিয়ার বিরুদ্ধে একাধিক অপকর্মের অভিযোগ আমার কাছেও আছে। তালতলী বাসির দাবী লম্পট লালমিয়া ও তার সহযোগী প্রভাবশালী মহলের বিচার হোক। তালতলী থানার অফিসার ইনচার্জ বাবুল আকতার বলেন, আমার কাছে এখন পর্যন্ত কেহ অভিযোগ দেয়নি অভিযোগ পেলে আইনি ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।