মেডিকেল প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

মেডিকেল প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি

বিশেষ প্রতিবেদক : ফাঁসকৃত প্রশ্নে ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস-বিডিএস ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের পদত্যাগ দাবি করেছেন মেডিকেলে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। এছাড়া অনুষ্ঠিত এমবিবিএস-বিডিএস ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা নেওয়ারও দাবি জানান তারা।

মঙ্গলবার (২২ সেপ্টেম্বর) সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন থেকে এ দাবি জানানো হয়।

‘ফাঁসকৃত পরীক্ষায় ডাক্তার হলে, রোগী মরবে গণহারে’, ‘প্রশ্ন যদি হয় ফাঁস, পড়ব কেন বারো মাস’, ‘শিক্ষার্থীদের শ্রম, মেধা, স্বপ্ন ও যোগ্যতা নিয়ে আর কত ছিনিমিনি’, ‘শিক্ষা কারো বাপের মাল নয়, অর্থ দিলে সব হয়’, ‘প্রশ্ন ফাঁস বারো মাস, এই আমাদের বাংলাদেশ’, ‘ফাঁসকৃত প্রশ্নে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস’, এমন লেখা সম্বলিত বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন বহন করে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা।

মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী মোজাম্মেল হোসেন জানান, ‘যে দেশে পিএসসি, এসএসসি, বিসিএস, মেডিকেলসহ সকল পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়, সেদেশে মেধার মূল্যায়ন হবে কীভাবে।  সরকারের মন্ত্রীরা অনেক বড় বড় কথা বলেন। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করে না। সারাবছর পড়ালেখা করা কি আমাদের অপরাধ। টাকা থাকলে যদি সবকিছু হয়, তবে মেধা ও শ্রমের কী দরকার। স্বাস্থ্যমন্ত্রী প্রশ্ন ফাঁসের দায় কোনভাবেই এড়াতে পারেন না।  মন্ত্রীর ব্যর্থতায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। ’

মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী অনিরুদ্ধ বড়ুয়া বলেন, ২০১৫-১৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস-বিডিএস পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আমাদের এ আন্দোলন। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে নেওয়া পরীক্ষার পাতানো ফলাফল আমরা বাতিলের দাবি করছি।  আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত এ আন্দোলন চলবে।

মানবন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা জানান, ২০০৬ সালের পর এবার এত বড় মাত্রায় মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে। যারা দিনে ১৭-১৮ ঘণ্টা পড়াশোনা করে পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিল, তারা আজ পরাজিত হয়ে গেছে অসৎ লোকের অর্থশক্তির কাছে। তাদের স্বপ্নের সঙ্গে করা হয়েছে প্রতারণা। তাদের স্বপ্ন আর পরিশ্রম বৃথা গেছে। স্বাস্থ্য খাতে চলে আসা এ দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান এবং আমাদের প্রাণের দাবি ফাঁসকৃত প্রশ্নে নেয়া পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেয়া হোক।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন রাকিব আহমেদ, সাকিব চৌধুরী, তিশা, শর্মিষ্ঠা ও আল কাদেরী জয়।

গত শুক্রবার সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোর সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা হয়, যাতে অংশ নেন ৮৩ হাজার শিক্ষার্থী। রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর যে ফল ঘোষণা করেছে, তাতে ভর্তির যোগ্য শিক্ষার্থী পাওয়া গেছে ৪৮ হাজার ৪৪৮ জন।

এ পরীক্ষার ‘প্রশ্নপত্র ফাঁসে’ জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে শনিবার থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করে পরীক্ষার্থীরা।  বিএনপিও পরীক্ষা বাতিল করে নতুন করে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছে।