ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি! বৃষ্টিতে গরু ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি! বৃষ্টিতে গরু ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

টাঙ্গাইলদর্পণডটকম ডেক্স : আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে দেশের বৃহত্তম গরুর হাট নামে পরিচিত টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী গরুর হাট যথেষ্ট গুরম্ন। বৃষ্টির কারণে হাটে ক্রেতার চেয়ে গরুর আমদানি বেশি থাকায় গরু ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন। বিভিন্ন জেলাগুলো থেকে পযাপ্ত গরু সরবরাহ থাকলেও সেই তুলনাই ক্রেতার দেখা মিলছে না। একদিকে পশুর হাটে ক্রেতা শুন্যতা অন্যদিকে বৃষ্টির প্রকোপে গরুর রোগবালাইয়ের শংকায় রয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এসব কারণে ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাজ পড়েছে। তাই অপেক্ষায় কাটছে বিক্রেতাদের সময়।

যমুনা সেতু পূর্ব গোল চত্বর থেকে সাত কিলোমিটার উত্তরে এবং ভূঞাপুর উপজেলা সদর থেকে চার কিলোমিটার পশ্চিমে যমুনা নদীর তীরে সাত একর জমির ওপর গড়ে উঠেছে এ পশুর হাট। শুধু দেশের গরু ব্যবসায়ীরাই নয়, ভারত থেকেও অনেক ব্যবসায়ী আসছে এ হাটে গরু বিক্রির জন্য। সারা বছর সপ্তাহে দুই দিন রবিবার ও বৃহস্পতিবার বসে গোবিন্দাসী গরুর হাট। সারা বছর প্রতি হাটে শতাধিক ট্রাক গরু আসলেও কোরবানির ঈদ সামনে রেখে প্রতি হাটে তিন শতাধিক ট্রাক গরু আসছে এ হাটে।

সরেজমিনে গোবিন্দাসী গরুর হাটে রবিবার দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, বৃষ্টির কারনে হাটে পানি জমে যাওয়ায় কাদায় ভরে গেছে হাট। বৃষ্টিতে গরু এবং খাবার ভিজে যাওয়ায় করুণ অবস্থা সৃস্ট হয়েছে। অন্যদিকে বৃষ্টি বেপারীদের দারুন বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। ক্রেতা তো দূরের কথা বেপারীদের চলাফেরা কষ্টকর হযে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টির কারনে হাটে ক্রেতার সংখ্যা একেবারেই কম থাকায় একদিকে বিক্রেতারা গরুর দাম কম দাবি করলেও ক্রেতারা বলছে ভিন্ন কথা। এ অবস্থা চলতে থাকলে লোকসান গুণতে হবে বলে জানালেন বেপারীরা। এদিকে বৃষ্টি থাকায় এখন হাটে ক্রেতার চাইতে বিক্রেতা ও কসাই আনাগোনা বেশি।

ভূঞাপুর উপজেলার রাউৎবাড়ি গ্রাম থেকে গরু বিক্রি করতে আসা ফুলচান শেখ বলেন, নিজের খামারের ৫টি গরু বিক্রি করতে হাটে এসেছেন তিনি। এসে দেখেন হাটে ক্রেতার চেয়ে গরু অনেক বেশি। ঈদ আসন্ন থাকায় বিক্রির আশায় থেকে যায় হাটে। সকালে তিনি হাটে এসেছেন তবে দুপুর গড়িয়ে গেলেও এখন পযন্ত একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। তিনি জানান অল্প কিছু ক্রেতা থাকলেও যা দাম বলে খরচের সমান ও তা বলে না।

দিনাজপুর থেকে আসা গরু ব্যবসায়ী ইকবাল ভুঁইয়া বলেন, এ হাট দেশের বৃহত্তম গরুর হাট কিন্তু বৃষ্টি থাকার কারনে হাটে ক্রেতার সংখ্যা একেবারে কম। তিনি ১৫টা গরু এনেছেন তবে দুপুর নাগাদ ২টি গরু বিক্রি করেছেন। তবে হাটে কিছু সংখ্যক মানুষ আসলেও ক্রেতার চেয়ে বেশি ভাগই আসছে গরু দেখার জন্য। এ অবস্থায় চলতে থাকলে লোকসান গুণতে হবে বলেও জানান তিনি।

ঘাটাইল উপজেলার বকশিয়া থেকে আসা গরু বিক্রেতা আমিনুর ইসলাম বলেন, হাটে ক্রেতা অনেক কম তবে পযাপ্ত পরিমান গরু থাকায় পাইকাররা বাড়িতে যে দাম বলেছে তার চেয়ে এখন হাটে কয়েক হাজার টাকা কম দাম বলে। তাই বাধ্য হয়েই হাট থেকে গরু ফেরত নিয়ে যেতে হবে বলেও জানান তিনি।

জামালপুর থেকে আসা হারুন, সুমন, কালাম সহ একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, বৃষ্টির কারণে যেভাবে গরুর শরীর ভিজছে তাতে নানা আশংকা তৈরি হচ্ছে। এভাবে বৃষ্টি থাকলে গরু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে। এমনটি মারাও যেতে পারে বলে জানিয়েছেন তারা।

এ বিষয়ে গোবিন্দাসী হাটের কোষাধ্যক্ষ খন্দকার মোয়াজ্জিন বলেন, হাটে দেশের বিভিন্ন  স্থান থেকে আসা প্রায় ২০হাজার গরু রয়েছে। তবে বৃষ্টির কারনে ক্রেতা আসতে না পারার কাররে গরুর আমদানি একটু বেড়ে গেছে। এখন হাটে ক্রেতার চেয়ে গরু বেশি হয়েছে বলেও জানান তিনি।

সৌজন্যে : টাঙ্গাইলবার্তা২৪ডটকম।