মির্জাপুরে মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয়ায় ২ পুলিশ আটক

মির্জাপুরে মাদক ব্যবসায়ীকে ছেড়ে দেয়ায় ২ পুলিশ আটক

স্টাফ রিপোর্টার : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে গত সোমবার দুই হেরোইন ব্যবসায়ীকে আটকের পর টাকা নিয়ে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগে মির্জাপুর থানা পুলিশের দুই সদস্যকে আটক করে মারপিট করেছে জনতা।

সোমবার সকাল সাড়ে আটটার দিকে মির্জাপুর উপজেলা সদরের পোস্টকামুরী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।  পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে ওই দুই পুলিশকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।

এলাকাবাসী জানান, পোস্টকামুরী গ্রামের আমিনুরের স্ত্রী রুমা বেগম ও তার ছেলে রানা দীর্ঘদিন যাবৎ তার বাড়ি থেকেই হেরোইন ও ইয়াবা বিক্রি করে আসছিলেন।  পুলিশ ওই বাড়িতে মাঝে মধ্যেই অভিযান চালালেও তাদের গ্রেফতার করা হয় না।  সোমবার সকালে মির্জাপুর থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সিরাজুল ও কনস্টেবল সেলিম মোটরসাইকেল নিয়ে আমিনুরের বাড়িতে যান।  বসত ঘরের ভেতর আমিনুরের স্ত্রী রুমাকে আটক করে হ্যান্ডকাপ পরান। পরে আমিনুরের ছেলে রানা টাকা দেয়ার কথা বলে কনস্টেবল সেলিমকে নিয়ে মির্জাপুর বাজারে আসেন এবং মোটা অংকের টাকা ব্যবস্থা করে দেন। টাকা পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে গিয়ে সিরাজুল ও সেলিম রুমার হ্যান্ডকাপ খুলে দেয়।

এদিকে এ ঘটনা এলাকাবাসী জানতে পেয়ে ওই দুই পুলিশসহ রুমাকে ঘরের ভেতর প্রায় এক ঘণ্টা আটক করে রাখেন। পরে ওই দুই পুলিশ ঘর থেকে বেরিয়ে চলে আসার চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতা তাদের কিল ঘুসি মারেন। এসময় রুমা ও ওই দুই পুলিশ দৌঁড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে জনতাও তাদের ধাওয়া করে। এসময় থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে সিরাজুল ও সেলিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসেন।

পোস্টকামুরী গ্রামের আরিফ হোসেন, শফিকুল ইসলাম শফি, ইয়াকুব, ফুলবানু, কদভানু বেগম বলেন, আমিনুরের স্ত্রী রুমা ও তার ছেলে রানা দীর্ঘদিন যাবৎ বাড়িতেই মাদক বিক্রি করে আসছে।  পুলিশ মাঝে মধ্যে ওই বাড়িতে এসে টাকা নিয়ে চলে যায়।  সোমবার সকালেও পুলিশ এসে রুমাকে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে আটক করেন।  প্রায় আধাঘণ্টা পর টাকা নিয়ে রুমাকে ছেড়ে দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে উত্তেজিত জনতাতাদের ঘেরাও করে রাখেন।

সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে টাকা নিয়ে রুমাকে ছেড়ে দেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই বাড়িতে আভিযানে গিয়েছিলাম।  মাদক না পেয়ে চলে আসার সময় জনতা উত্তেজিত হয়ে উঠেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।

মির্জাপুর থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শহিদুল ইসলাম দুই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে উত্তেজিত জনতা শান্ত হন।

মির্জাপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মাইন উদ্দিন বলেন, রুমার স্বামী আমিনুরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকায় এএসআই সিরাজুল ও কনস্টেবল সেলিম তাকে গ্রেফতার করতে ওই বাড়িতে গিয়েছিল।  পুলিশ ও জনতার ঘটনাটি আনাকাঙ্খিত বলে তিনি উল্লেখ করেন।