ডিএমসিতে রক্তের দালালদের দাপট, রোগীরা ঝুঁকিতে

ডিএমসিতে রক্তের দালালদের দাপট, রোগীরা ঝুঁকিতে

স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রক্তের দালালদের দাপটে অতিষ্ঠ রোগী ও তাদের স্বজনেরা। তাদের কারণে মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসায় ব্যাঘাত ঘটছে। অতিরিক্ত অর্থ খরচ করেও সঠিক সেবা পাচ্ছেন না রোগীরা।

জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি কয়েকটি ওয়ার্ডে প্রায়শই মুমূর্ষু রোগীদের রক্তের প্রয়োজন দেখা দেয়। এই সুযোগটাই গ্রহণ করে থাকে দালালরা। জরুরি সময়ে ভর্তি হওয়া রোগীদের এদের কাছে ধরনা দিতে হয়।

জানা গেছে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্বপন, সেন্টু, রুহুল, মিজান, রাসেল, মাহফুজ, ইব্রাহীম, নাসির, হাসেম, বাদলসহ ২৫ থেকে ৩০ জন দালাল রয়েছে। তারাই পুরো হাসপাতালকে নিয়ন্ত্রণ করছেন। তারা একটি রক্তের ব্যাগের দাম যেখানে ৫শ থেকে ১ হাজার টাকা, সেখানে এই দালালরা নিয়ে থাকেন ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

জানা গেছে, তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ডেলিভারি বা দুর্ঘটনায় কবলিত রোগীদের চিকিৎসকরা রক্তের প্রয়োজনীয়তার কথা বললেই স্বজনেরা রক্তের যোগান দিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু অনেক সময়ই তারা দ্রুত রক্তের ব্যবস্থা করতে পারেন না। আর সেই সুযোগগুলো কাজে লাগান দালালরা।

দেখা গেছে, ওই মুহূর্তে মুমূর্ষু রোগির স্বজনদের মানসিক অবস্থা দেখে ‘রক্তের ডোনার নেই। যোগাড় করে দিতে হবে’ ইত্যাদি কারণ দেখিয়ে ৫শ টাকার রক্ত দালালরা ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায় কিনতেও বাধ্য করেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এই দালালরা সার্বক্ষণিকভাবে ২১২ নম্বর গাইনি ওয়ার্ড, সার্জারি ওয়ার্ড, ক্যাজুয়ালিটি ওয়ার্ডসহ আরো কিছু গুরুত্বপূর্ণ ওয়ার্ডের বয় নার্স, ব্রাদার ও চিকিৎসকের কাছে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে তারা রোগির কাছে রক্ত পৌঁছে দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একজন কর্মকর্তা জানান, হাসপাতালের  কর্মচারীরা দালালদের কাছে থেকে কমিশন নিয়ে রোগীদের রক্ত দেয়।

অভিযোগ আছে, অনেক সময় দালালদের সরবরাহ করা রক্ত ম্যাচ না হওয়ায় রোগী খিচুনিতে আক্রান্ত হয়। অনেক সময় রোগী মারাও যায়।

বাংলাদেশের একটি বৃহত্তম হাসপাতাল হচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বিভিন জেলা থেকে চিকিৎসা নিতে আসেন রোগিরা। কিন্তু বিদায় নেয়ার সময় সুনামের চেয়ে দুর্নামই করে বেড়ায় এই দালালদের কারণে।

এব্যাপারে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মিজানুর রহমান বাংলামেইলকে জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেয়েছি। অবশ্যই আমি ব্যবস্থা নেবো।