কুমুদিনী হাসপাতালে ফিস্টুলা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা

কুমুদিনী হাসপাতালে ফিস্টুলা রোগীদের বিনামূল্যে চিকিৎসা

বিভাস কৃষ্ণ চৌধুরী :  টাঙ্গাইলের মির্জাপুর কুমুদিনী হাসপাতালে ফিস্টুলা রোগীদের বিনামূল্যে অপারেশন করতে উগান্ডা থেকে এসেছেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সার্জন ফ্রেডক্রিয়া। আজ শুক্রবার থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ডাক্তার ফ্রেডক্রিয়া কুমুদিনী হাসপাতালে নারীদের ফিস্টুলা রোগের অপারেশন করবেন। 

বৃহস্পতিবার সকালে তিনি উগান্ডা থেকে কুমুদিনী হাসপাতালে এসেছেন। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৪৫ জন ফিস্টুলা রোগী বিনামূল্যে এ চিকিৎসা পেতে কুমুদিনী হাসপাতালে এসে ভর্তি হয়েছেন। কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার দুলাল চন্দ্র পোদ্দার জানান, বিলম্বিত প্রসব ও ভুল অপারেশনের কারণে মহিলাদের যোনিপথ ও মূত্রথলির মাঝখানের দেয়াল ছিদ্র হয়ে অনবরত প্রস্রাব যোনিপথ দিয়ে ঝরতে থাকে। এছাড়া অনভিজ্ঞ দাই দিয়ে বাড়িতে সন্তান প্রসবকালে অনেক মায়ের যোনিপথ ও পায়ূপথ এক হয়ে ফিস্টুলা রোগের সৃষ্টি করে। 

এই সমস্ত রোগীরা লোক লজ্জার ভয়ে এ রোগ সম্পর্কে নিকট জনদেরও জানাতে চান না বা টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারেন না। এক সময়ে তারা সমাজের অন্তরালে চলে যান। এ সমস্ত রোগীদের কুমুদিনী কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে খুঁজে বের করে বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করছেন। ডাক্তার দুলাল চন্দ্র পোদ্দার আরও বলেন, ২০০৫ সাল থেকে কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছে। সেই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার থেকে আগামী ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উগান্ডার ডাক্তার ফ্রেডক্রিয়া ফিস্টুলা রোগের অপারেশন করবেন। 

তিনি বলেন, ফিস্টুলা রোগীদের বিনামূল্যে অপারেশন ও ওষুধ প্রদানের পাশাপাশি তাদের থাকা-খাওয়ার সু-ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া রোগীর একজন সাহায্যকারীর থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থাসহ ও যাতায়াত খরচ বহন করবে কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। 

মাদারীপুর জেলার কালকিনী উপজেলার কোকিরচর গ্রামের পারভীন (৩৮), একই জেলার হাটিপাড়া গ্রামের রাশিদা (৪৫), মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার সোনালী (৪২), একই জেলার খিলগাতি গ্রামের মমতা রানী (৩০) ফিস্টুলা রোগের চিকিৎসা নিতে কুমুদিনী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এদের মধ্যে অনেকেই ১০/১৫ বছর ধরে এই ফিস্টুলা রোগে ভুগছেন। 

তারা জানান, লোক লজ্জার ভয়ে এবং অভাবের কারণে তারা রোগটির চিকিৎসা করাতে পারেনি। চিকিৎসা নিতে আসা অনেক রোগীর এই রোগের কারণে স্বামী পরিত্যাক্ত হয়েছেন। কিভাবে কুমুদিনী হাসাপাতালে আসলেন জানতে চাইলে তারা বলেন, স্থানীয় ব্রাক অফিসের সহযোগিতায় তারা কুমুদিনী হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। এ ব্যাপারে কুমুদিনী হাসপাতালের পরিচালক ডাক্তার দুলাল চন্দ্র পোদ্দার বলেন, ইউএসএআইডি, এনজেন্ডার হেলথ ও কুমুদিনী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এই চিকিৎসা ব্যয়ভার বহন করছেন।